ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম ও ঈদুল ফিতরের নামাজে যাওয়ার সময় করণীয়
শবে কদরের রাত চেনার উপায় জানুন ঈদ হচ্ছে মুসলমানদের প্রধান ধর্ম উৎসব।প্রত্যেকটা মুসলমান ঈদের জন্য
সারাটা বছর অপেক্ষা করে থাকেন। তবে অনেক মুসলমান জানেনা ঈদুল ফিতরের নামাজের
নিয়ম ও ঈদুল ফিতরের নামাজের যাওয়ার সময় করণীয় কি?
প্রতি বছরে একবার ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়া হয় যার কারণে বেশিরভাগ মুসলমান ভুলে
যায় ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম,ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত এবং ঈদুল ফিতরের
নামাজে যাওয়ার সময় করণীয় কি সে সম্পর্কে।মুসলমানদের প্রধান উৎসব ঈদুল ফিতরের
নামাজে যাতে কোন প্রকার সমস্যা না হয়।তাই সকলের সুবিধার্থে এই আর্টিকেলে ঈদুল
ফিতরের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
পেজ সূচিপত্রঃ ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত
একটি মাস রমজানের রোজা রাখা শেষ হলে তারপর বছর ঘুরে ঈদুল ফিতরের নামাজ একবার আসে।
যার কারণে অনেক মুসলমান ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত ভুলে যায়।আপনি চাইলে ঈদুল
ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে অথবা বাংলায় উচ্চারণ করতে পারেন।
তাছাড়া যখন আপনি ঈদগাহে যাবেন তখন ইমাম সাহেবের বক্তব্য শেষ হয়ে গেলে নামাজের
আগে কিছু কথা বলে এবং ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত সম্পর্কে আলোচনা করে। আপনি চাইলে
তখন ইমামের সাথে সাথে নিয়ত করতে পারেন।তবে সকলের সুবিধার্থে নিচে ঈদুল ফিতরের
নামাজের নিয়ত বাংলায় কিভাবে উচ্চারণ করবেন তা উল্লেখ করা হলো।
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত বাংলায়: আমি ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব
নামাজ অতিরিক্ত ছয় তাকবীরের সঙ্গে এই ইমামের পিছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহকে
সন্তুষ্ট করার জন্য অথবা আল্লাহর জন্য আদায় করছি। 'আল্লাহু আকবার'
আপনারা চাইলে ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত উপরে উল্লেখিত যেভাবে বলা হয়েছে সেই
ভাবে ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে মনে মনে বলে নিয়ত করতে পারেন।
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত করা হয়ে গেলে ঈদুল ফিতরের নামাজ শুরু করতে হবে।ঈদুল
ফিতরের নামাজ আদায় করার আগে অবশ্যই আপনাকে ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে
ভালোভাবে জানতে হবে।
- ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে নিয়ত করা হলে ইমামের সাথে সাথে আল্লাহু আকবার বলে তাহরীমা বাঁধতে হবে বা হাত বাঁধতে হবে।(স্বাভাবিক নামাজে যেভাবে হাত বাধঁতে হয়)
- হাত বাধাঁ হয়ে গেলে প্রথমে আপনাকে ছানা পড়তে হবে।( সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়াবিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা)
- ছানা পড়া শেষ হয়ে অতিরিক্ত তিন তাকবীর দেওয়া ইমামের সাথে তিনবার 'আল্লাহু আকবার' বলতে হবে।
- প্রথম তাকবীরে দুই হাত ছেড়ে দিতে হবে, দ্বিতীয় তাকবীরে দুই হাত ছেড়ে দিতে হবে এবং তিন নাম্বার তাকবীর দেওয়া হয়ে গেলে দুই হাত আবার বেঁধে নিতে হবে।
- তিন নাম্বার তাকবীরে হাত বেঁধে নেওয়ার পরে আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ বলে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা মিলাতে হবে।
- সূরা ফাতিহার সাথে সূরা মিলানোর হলে নিয়মিত যেভাবে নামাজ পড়ি ঠিক সেইভাবে রুকু, সেজদা সম্পূর্ণ করে প্রথম রাকাত শেষ করতে হবে।
- প্রথম রাকাত সম্পন্ন হওয়ার পর দ্বিতীয় রাকাতে বিসমিল্লাহ বলে সূরা ফাতিহা সাথে আবার সূরা মিলাতে হবে।
- দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতেহার সাথে সূরা মিলানোর হয়ে গেলে খাবার অতিরিক্ত তিন তাকবীর দিতে হবে।ইমামের সাথে সাথে তিনবার আল্লাহু আকবার বলতে হবে ।
- দ্বিতীয় রাকাতে যখন অতিরিক্ত তিন তাকবীর দেওয়া হবে তখন প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তাকবীরে দুই হাত ছেড়ে দিতে হবে চতুর্থবার যখন তাকবীর দিবে তখন সঙ্গে সঙ্গে রুকুতে চলে যেতে হবে।
- রুকুতে চলে যাওয়ার পর স্বাভাবিক নামাজের মত সেজদা দিতে হবে।
- সর্বশেষ বৈঠকে বসে তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরাতে হবে।
সালাম ফিরানোর শেষ হওয়ার পরে ইমামের সাথে তাকবীর বলতে হবে।
তাকবীর হলো: আল্লাহু আকবার ,আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু
আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করা শেষ হলে ইমাম সাহেব খুতবা পড়বে।
অবশ্যই ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের পরে খুতবা শুনতে হবে। কারণ খুতবা শোনা ওয়াজিব
তাই অবশ্যই সবাই নামাজের পরে খুতবা শুনবেন।আশা করি সবাই ঈদুল ফিতরের নামাজের
নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আরো
কোনো প্রকার প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন।
ঈদুল ফিতরের নামাজে যাওয়ার সময় করণীয়
আমরা সকলেই কমবেশি ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানি তবে ঈদুল ফিতরের
নামাজে যাওয়ার সময় করণীয় কিছু কাজ আছে যেগুলো আমরা অনেকেই জানি না।ঈদুল ফিতরের
নামাজের যাওয়ার আগে অবশ্যই ঈদুল ফিতরের নামাজের যাওয়ার সময় করণীয় কাজগুলো মনে
রাখবেন। তাহলে আপনি অনেক সওয়াব লাভ করতে পারবেন।
ঈদুল ফিতরের নামাজে যাওয়ার সময় করণীয় গুলো হল:
- একমাস রোজা রাখার পর যখন পবিত্র ঈদের চাঁদ উঠবে তখন অবশ্যই ঈদের চাঁদ দেখতে হবে।
- ঈদের দিন অবশ্যই সবাই চেষ্টা করবেন ফজরের সালাত জামাতের সহিত আদায় করার জন্য।
- সকালে যখন ঈদের নামাজ পড়তে যাবেন তখন অবশ্যই মিসওয়াক করে যাবেন। যাতে আপনার মুখে কোন প্রকার দুর্গন্ধ না থাকে।
- ভালোভাবে মুখে মিসওয়াক করা হয়ে গেলে পরিষ্কার করে ভালোভাবে গোসল করতে হবে।
- গোসল করা শেষ হলে অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জামা কাপড় পড়তে হবে নতুন জামা কাপড় পড়তে হবে এটা কোন বাধ্যতামূলক নয়।
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জামা কাপড় পড়ার পরে সুগন্ধি অথবা আতর ব্যবহার করতে হবে।
- নামাজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়ার আগে অবশ্যই মুখে খেজুর অথবা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে বের হবেন।
- ঈদুল ফিতরের নামাজে যাওয়ার সময় সদকার ফিতরা আদায় করতে হবে।
- আপনি যদি অসুস্থ না থাকেন তাহলে চেষ্টা করবেন ঈদগার মাঠে পায়ে হেঁটে যাওয়ার।
- পায়ে হেটে যখন ঈদগার মাঠে যাবেন তখন অবশ্যই জিকির করতে করতে যাবেন।
- যদি সম্ভব হয় চেষ্টা করবেন ঈদের নামাজ পড়তে যেই রাস্তা দিয়ে যাবেন আসার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে বাড়িতে ফেরার জন্য।
- ঈদের দিন আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করবেন সদকা করার।
ঈদের দিন পরিবার-পরিজন নিয়ে হাসিখুশি থাকা এবং আনন্দময় সময় কাটানোর জন্য কারণ
মুসলমানদের প্রধান উৎসব হলো ঈদ।উপরের উল্লেখিত বিষয়গুলো অবশ্যই মানার চেষ্টা
করবেন।এতে আপনি অনেক সওয়াব পেয়ে লাভ করতে পারবেন। আশা করি এতক্ষণে ঈদুল ফিতরের
নামাজে যাওয়ার সময় করণীয় কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
মন্তব্য
ঈদ মানে হাসি খুশি ঈদ মানে আনন্দ। প্রত্যেক বছর মুসলমানদের জন্য ঈদ হচ্ছে
আনন্দময় পবিত্র একটি দিন।এতক্ষণ আর্টিকেলটি পরে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের
নিয়ম , ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত, এবং ঈদুল ফিতরের নামাজে যাওয়ার সময় করণীয়
কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই
আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন যাতে তারাও ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম ও ঈদুল
ফিতরের নামাজে যাওয়ার সময় করণীয় কি তা জানতে পারে।
আয়াত টিপসের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url