ফরজ গোসলের নিয়ম ও ফরজ গোসল যে পানি দিয়ে করা জায়েজ

রোজা রাখার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া আসসালু আলাইকুম,আজকে এই আরর্টিকেলে ফরজ গোসলের নিয়ম,নিয়ত ও দোয়া সম্পর্কে আলোচনা করবো।গোসল আমাদের প্রতিদিনের কাজের একটি অংশ।সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য প্রতিদিন গোসল করতে হয়।ইসলামের পরিভাষায় ফরজ গোসলের নিয়ম হলো সমস্ত দেহ ধৌত করার মাধ্যমে পূর্ণ পবিত্রতা অর্জনের একটি পন্থা।ইবাদতের ক্ষেত্রে পূর্বশর্ত হচ্ছে গোসল করা।
ফরজ গোসলের নিয়ম,নিয়ত ও দোয়া সম্পর্কে জানুন
সকল প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ যৌনসঙ্গম,হায়েজ-নেফাস সমাপ্তির পর,বীর্যপাত,সন্তান প্রসবের পর এবং মৃত্যুর পরে গোসল করানো ফরজ (বাধ্যতামূলক)।একজন মুসলিমের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ।
পোস্ট সূচিপত্রঃ

ভূমিকাঃ

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার জন্য অবশ্যই আমাদের পাক-পবিত্র থাকতে হবে।এর জন্য ফরজ গোসলের নিয়ম,নিয়ত ও দোয়া সম্পর্কে জানতে হবে।যদি আমাদের গোসল ফরজ হয় আর আমরা যদি ফরজ গোসল আদায় না করি তা হলে আমাদের নামাজ কবুল হবে না।তা হলে চলুন আজকে আমরা জেনে নেই কীভাবে ফরজ গোসলের নিয়ম,নিয়ত ও দোয়া সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

ফরজ গোসলের নিয়ত

ফরজ গোসল করার পূর্বে আমাদের নিয়ত করতে হবে।আমরা আরবি এবং বাংলা উভয় ভাষাতেই নিয়ত করতে পারি। 

বাংলা উচ্চারণঃ ' নাওয়াইতুল গুছলা লিরাফইল জানাবাতি '

অর্থঃ আমি নাপাকি থেকে পাক হওয়ার জন্য গোসল করছি ।আমি পাক-পবিত্র হওয়ার জন্য গোসল করছি নিয়ত করলেও হবে।মনে মনে সংকল্প করাই হচ্ছে নিয়ত।নিয়ত করার পরে বিসমিল্লাহ বলে ফরজ গোসল শুরু করতে হবে।আশা করছি ফরজ গোসলের নিয়ত জানতে পেরেছেন। 

গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি

ফরজ গোসল করার সময় যদি কোনো ফরজ বাদ পরে যায় তা হলে কিন্তু গোসল হবে না। গোসলের ফরজ অনুসরণ করে গোসল করতে হবে। নিচে গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি তা উল্লেখ করা হলোঃ
গোসলের ফরজ তিনটি।যথা -
  • কুলি করা।
  • নাকের ভিতর পানি দেয়া।
  • পুরো শরীর ধৌত করা।

ফরজ গোসলের নিয়ম

গোসল কথাটি হচ্ছে আরবি শব্দ।এর অর্থ হলো সমস্ত শরীর ধোয়া।শরিয়তের ভাষায় বলা হয় পবিত্রতা ও আল্লাহর নৈকট্য পাওয়ার উদ্দেশ্য পবিত্র পানি দিয়ে পুরো শরীর ধোয়াকে গোসল বলে।চলুন ফরজ গোসলের নিয়ম জেনে নেই। 
  • গোসলের নিয়ত করে বিসমিল্লাহ বলে,দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত ভালো করে ধৌত করা।
  • শরীরে কোন স্থানে অপবিত্র বস্তু থাকলে পরিষ্কার করা।
  • অজু করা,গড়গড়া কুলি করা,রোজাদার হলে গড়গড়া কুলি করা যাবে না।তিনবার কুলি করা সুন্নত।
  • তিনবার নাকে পানি দিয়ে নাক ভালো মতো পরিষ্কার করা।
  • অজু করার পরে মাথায় এমন ভাবে পানি ঢালতে হবে যেন চুলের গোড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছে যায়।
  • প্রথমে ডান কাঁধে পরে বাম কাঁধে পানি ঢেলে সমস্ত শরীর ধৌত করা।যাতে শরীরের কোন অংশ শুকনো না থাকে।
  • সর্বশেষ পা ধুয়া।

ফরজ গোসল যে পানি দিয়ে করা জায়েজ

ইসলামের বিভিন্ন ইবাদতের ক্ষেত্রে পূর্বশর্ত হচ্ছে গোসল কর।এছাড়া শুক্রবার জুম্মার নামাজের পূর্বে,ঈদের নামাজের পূর্বে, ইহরাম বাধার পূর্বে,হজের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পূর্বে, অজ্ঞান হওয়ার পর সচেতন হলে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পূর্বে গোসল করা মুস্তাহাব।(উৎসাহিত করা হয়)।

ইসলামের দৃষ্টিতে গোসলের পানি নির্বাচন করা অতিজরুরী।ফরজ গোসল যে পানি দিয়ে করা জায়েজ তা নিচে উল্লেখ করা হলো -
  • বৃষ্টির পানি।
  • সাগরের পানি।
  • নদীর পানি।
  • ঝরনার পানি।
  • কুয়ার পানি।
  • বরফ গলা পানি।
  • বড় পুকুরের বাট টাংকির পানি।
গোসলের পূর্বে অবশ্যই বিবেচনা করে নিবেন যে পানি দিয়ে ফরজ গোসল করছেন সেই পানিটা পবিত্র নাকি অপবিত্র।

ফরজ গোসল যে পানি দিয়ে করা জায়েজ না

ইসলামের পরিভাষায় ফরজ গোসলের নিয়ত হলো সমস্ত দেহ ধৌত করার মাধ্যমে পূর্ণ পবিত্রতা অর্জনের একটি পন্থা।আপনি যে পানি দিয়ে ফরজ গোসল আদায় করছেন সেই পানি যদি জায়েজ না হয়।তাহলে আপনার শরীর পাক পবিত্র হবে না।ইসলামের দৃষ্টিতে যে পানি দিয়ে ফরজ গোসল যে পানি দিয়ে করা জায়েজ না।
  • অপরিচ্ছন্ন বা অপবিত্র প্রাণী।
  • মল বা গাছ নিসৃতঃ পানি।
  • অজু বা গোসলের পানি।
  • পানির মধ্যে কোন কিছু মেশানোর কারণে যে বর্ণ গন্ধ স্বাদ এবং গারত্ব পরিবর্তন হয়েছে।
  • পানির পরিমাণ অল্প এবং যে পানিতে মূত্র,রক্ত,মল বা মদ মিশানো হয়েছে।
  • যে পানিতে পশুপাখির অবশিষ্ট পড়ে থাকে।

ফরজ গোসল না করতে পারলে করণীয়

পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম হচ্ছে পানি। আল্লাহ তাআলা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি প্রাকৃতিক নিয়মে সরবরাহ করে রেখেছেন।যদি অবস্থা আলোকে পানি না পাওয়া যায় কেউ অসুস্থ হয়ে পানি ব্যবহারে একেবারে অপরাগ হয়।সে সময়ে গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করবে।
যদি কেউ সফরে থাকো অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করো,অতঃপর পানি না পাও, তাহলে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় ভাই ও বোনেরা গোসল ফরজ হলে আমরা যদি ফরজ গোসল না করি,তাহলে আমাদের কোন ইবাদত কবুল হবে না এবং আমাদের অনেক গুনাহ হবে।তাই ফরজ গোসলের নিয়ত,নিয়ম ও দোয়া জেনে রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

আশা করছি আমার আর্টিকেলটি পরে সবাই ফরজ গোসলের নিয়ম,নিয়ত ও দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে জানার সুযোগ করে দিন।এতখন আর্টিকেলটি পরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আয়াত টিপসের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url