বিট লবণের সংকেত ও বিট লবণের উপকারিতা জানুন
আনারস খাওয়ার উপকারিতা জানুন আমরা অনেকেই বিট লবণ মানে কি, বিট লবণ খাওয়ার উপকারিতা এবং বিট লবণের সংকেত সম্পর্কে কিছুই জানিনা। আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য যারা বিট লবণ মানে কি, বিট লবণের উপকারিতা এবং বিট লবনের সংকেত সম্পর্কে জানতে চান।
আমরা সাধারণ লবণের তুলনায় বিট লবণ খুব কম ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এই বিট লবণ
খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে তা আমরা অনেকেই জানিনা।চলুন জেনে নেওয়া যাক বিট
লবণের উপকারিতা,বিট লবণ মানে কি,বিট লবণ খাওয়ার নিয়ম।
সূচিপত্র: বিট লবণের উপকারিতা জানুন
ভূমিকা
বিট লবণ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর অনেক রোগ থেকে মুক্তি মেলে।আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকদের মতে বিট লবণ আমাদের শরীরের অনেক মারাত্মক রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে।
কিছু কিছু খাবারের বিট লবণ মেশালে খাবারের স্বাদ অনেকটাই বেড়ে যায়।
বিশেষ করে টক জাতীয় খাবারের সঙ্গে বেশি মিশানো হয়।বিট লবণ মানে কি, বিট লবণের
সংকেত, বিট লবন খাওয়ার নিয়ম, বিট লবণের উপকারিতা, গর্ভাবস্থার বিট লবণ খাওয়া
যাবে কিনা সহ বিট লবণ খেলে কি ওজন বাড়ে নাকি জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে
পড়ুন।
বিট লবণ মানে কি?
বিট লবণ হচ্ছে এক ধরনের খনিজ লবণ। এটি সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও
পাকিস্তানের হিমালয়ের আশেপাশের লবণ সমৃদ্ধ মাটির নিচ থেকে পাথর আকারে পাওয়া
যায় বা উত্তোলন করা হয়।এই বিট লবনের মূলত সোডিয়াম ক্লোরাইড, অল্প সোডিয়াম
সালফেট,সোডিয়াম সালফাইড,হাইড্রোজেন সালফাইড,আয়রন সালফাইড, সোডিয়াম বাই
সালফেটের অপদ্রব্য দিয়ে তৈরি। বিট লবণ মুখে দেওয়ার পরে যেই নুনটা স্বাদ আমাদের
মুখে আসে সেটি সোডিয়াম ক্লোরাইড থেকে আসে।আয়ুর্বেদিক ভাষায় বিট লবণকে শীতল
মসলা বলা হয়। কেউ কেউ এটাকে ব্লাক সল্ট বলে থাকে।
বিট লবণের সংকেত
আমরা যেটাকে বিট লবণ, ব্ল্যাক সল্ট বা কালা নমক হিসেবে চিনি। সেই লবণে অন্যান্য
বিভিন্ন উপাদানের সাথে মূলত সোডিয়াম ক্লোরাইড আছে যার থেকে এর রং এসেছে। আবার এই
বিট লবণের গন্ধটি সালফারের উপাদানের কারণে এসেছে। এই বিট লবনের খনিজের উপাদানের
মধ্যে গ্রেগাইটের উপস্থিত থাকার কারণে Fe3S4ফেরাস(ll,lll)সালফাইড যার ফলে বিট
লবণের রং বাদামী বা গোলাপি থেকে গারোবেগুনি হয়ে থাকে।আশা করি বিট লবণের সংকেত
সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
বিট লবণ খাওয়ার নিয়ম
বিট লবনের উপকারিতা সম্পর্কে জানার আগে বিট লবণ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের
জানা অতি জরুরী। বিট লবণ সাধারণত পেট কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস,পেট খারাপ সহ পেটের
নানান রকম সমস্যা দূর করে বিট লবণ। তাই আমাদের প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানির
সঙ্গে বিট লবণ ভালোমতো মিশিয়ে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করতে হবে। রান্নায়
লবণ কম হওয়ার ফলে খাবারের স্বাদ ঠিকমতো পাওয়ার জন্য সাদা লবণের বদলে বিট লবণ
খেতে পারেন।
বিট লবণের উপকারিতা
প্রতিদিন আমরা রান্নায় এবং অন্যান্য রেসিপিতে সাদা লবণ ব্যবহার করে থাকি।বিট লবন
আমাদের খুব বেশি একটা খাওয়া হয় না। শুধু তাই নয় বিট লবণে যে প্রচুর উপকারিতা
রয়েছে তা আমরা অনেকেই জানিনা। চলুন আমরা জেনে নেই বিট লবনের উপকারিতা গুলো কি কি
- বিট লবণ খাওয়ার ফলে আমাদের শারীরিক দুর্বলতা নেমে এসে দূর করতে পারে।
- বিট লবন নিয়মিত খেলে আমাদের শরীরের ব্যাকটেরিয়াজাত সংক্রমনের আশঙ্কা থাকে না। কারণ বিট লবণে খনিজ থাকে। যাতে রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান।
- বিট লবণ খাওয়ার ফলে আমাদের হারের ক্ষয় রোধ করতে সহায়তা করে।
- বিট লবণ বদ হজমে সমস্যা থেকে নিমিষেই মুক্তি দিতে পারে।এবং আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- যাদের প্রায়ই বমি ভাব হয়ে থাকে তারা বিট লবণ খেতে পারেন বিট লবণ খাওয়ার ফলে বমি ভাবটা কমিয়ে দিতে পারে।
- আমাদের শরীরকে সতেজ রাখতে বিট লবণের ভূমিকা অনেক। কারণ এই বিট লবনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়ামের উপাদান।
- যারা শরীরের সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে চান তারা সাদা লবনের পরিবর্তে বিট লবণ খেতে পারে। কারন আমাদের শরীরের রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইলে আপনার খাবারের তালিকায় বিট লবণ রাখতে পারেন।
- আমাদের শরীরের ত্বকের যত্ন নেয় বিট লবণ। বিট লবণ আমাদের শরীরের ত্বক ভালো রাখতে অনেকটাই সাহায্য করে। আমাদের শরীরের ত্বকের আর্দ্রতা করে তুলতে বিট লবণ বেশ কার্যকারী কারণ এতে ভালো মানের ক্লিনজার রয়েছে।
- আমাদের শরীরে কোথাও ব্যাথা লাগলে বা ফুলে গেলে সেটি সারাতে সাহায্য করে এবং আমাদের পা ফটার সমস্যা ও দূর করে থাকে বিট লবণ।
আমাদের খাবারের ঠিকভাবে স্বাদ পাওয়ার জন্য আমরা প্রায়ই খাবারের সময় কাঁচা লবণ
খেয়ে থাকি।যার ফলে আমাদের শরীরের রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে বা লবণ অতিরিক্ত
মাত্রায় খেলে শরীরের রক্ত পানি হয়ে যেতে পারে। এজন্য আপনি সাধারণ লবণের বিকল্পে
হিসেবে খেতে পারেন আমাদের অতি পরিচিত বিট লবণ। আশা করি বিট লবণের উপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
বিট লবণের কিছু অপকারিতা
অনেক বিশেষজ্ঞরা গবেষণা করে দেখেছে বিট লবণে প্রায় প্রতি মিলিয়নে রয়েছে আড়াইশ
শতাংশ ফ্লুরাইড।এটা পটাশিয়াম বা সোডিয়াম যে কোন ফ্লুরাইড হতে পারে। যাতে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে টক্সিন। এর জন্য অতিরিক্ত বিট লবণ খাওয়া যাবেনা। অতিরিক্ত বিট
লবণ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের দাঁত ও হাড়ের গঠনে ক্ষয় ধরাতে পারে। অতিরিক্ত কোন
কিছুই খাওয়া ভালো না তাই মাত্র অতিরিক্ত বিট লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
গর্ভাবস্থায় বিট লবণ খাওয়া যাবে কিনা
গর্ভাবস্থায় আপনি চাইলে বিট লবণ খেতে পারেন। কারণ বিট লবণ রক্ত নিয়ন্ত্রণ করতে
সাহায্য করে। একজন গর্ভবতী মহিলার শরীরের রক্ত এ অবস্থায় নিয়ন্ত্রণ রাখা অতি
জরুরী। তাই গর্ভাবস্থায় আপনি চাইলে বিট লবণ খেতে পারেন তবে অতিরিক্ত মাত্রায়
খাওয়া যাবে না।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় স্ট্রবেরি খাওয়ার উপকারিতা
আপনার যদি ভালো না লাগে অথবা আপনি যদি সাচ্ছন্ন বোধ না করেন তাহলে জোর করে
খাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ গর্ব অবস্থায় নিজের অনিচ্ছায় জোর করে কোন কিছু
খাওয়া ভালো নয়।
বিট লবণ খেলে কি ওজন বাড়ে
বিট লবণের এত উপকারীতা শোনার পরে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে বিট লবণ খেলে কি
ওজন বাড়ে। বিট লবণ খাওয়ার ফলে মোটেও কারো ওজন বাড়ে না। আপনি যদি আপনার ওজন
নিয়ন্ত্রণ করতে চান অথবা ওজন কমাতে চান তারা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় কাঁচা লবণের
বদলে বিট লবণ রাখতে পারেন। কারণ এই বিট লবণে থাকা সোডিয়াম শরীরকে সতেজ রাখতে
সহায়তা করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। সুতরাং বিট লবণ খাওয়ার ফলে আমাদের ওজন
বাড়েনা।
পরিশেষ কথা
সাধারণত আমাদের খাবারে বেশি একটা বিট লবণ ব্যবহার করা হয় না। আশা করি আর্টিকেলটি
পরে বিট লবণ খাওয়ার নিয়ম, বিট লবণ মানে কি, বিট লবণের সংকেত, বিট লবণের
উপকারিতা, গর্ভাবস্থায় বিট লবণ খাওয়া যাবে কিনা সহ বিট লবণের সকল অজানা তথ্য
জানতে পেরেছেন।
তাই দেরি না করে আজকে থেকেই বিট লবণ ব্যবহার করা শুরু করুন এতে আপনার স্বাস্থ্য
ভালো থাকবে এবং অন্যান্য উপকার ও মিলবে। আর্টিকেলটি করে যদি আপনি উপকৃত হয়ে
থাকেন অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে।
আয়াত টিপসের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url