পিনাট বাটার খাওয়ার উপকারিতা ও সঠিক সময়
খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
বর্তমানে স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে অন্যতম খাবার হচ্ছে পিনাট বাটার।তবে পিনাট
বাটার খাওয়ার উপকারিতা, পিনাট বাটার খাওয়ার নিয়ম, প্রতিদিন কতটুকু পিনাট বাটার
খাওয়া উচিত, সেই সম্পর্কে অনেকেই জানে না। আজকের এই আর্টিকেল আপনাদেরকে জানাবো
পিনাট বাটারের পুষ্টিগুণ সহ সকল তথ্য।
ছোট বড় সকলের বেশ পছন্দের একটি খাবার পিনাট বাটার।কারণ পিনাট বাটারে একাধিক
পুষ্টিগুনে ভরপুর।যখন আমাদের শরীরে ফিটনেস নিয়ে কথা বলি অথবা ওজন কমানোর কথা বলি
তখনই চিকিৎসকদের মুখে পনাট বাটার নাম চলে আসে।পিনাট বাটার খাওয়ার উপকারিতা
সম্পর্কে জানতে মনোযোগ সহকার আর্টিকেলটি পড়ুন।
সূচিপত্রঃ পিনাট বাটার খাওয়ার উপকারিতা
ভূমিকা
সুস্বাদু বাদাম থেকে তৈরি পিনাট বাটার যতটা পরিচিত ততটাই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। এই
পিনাট বাটারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও প্রোটিন রয়েছে।প্রোটিন সমৃদ্ধ
পিনাট বাটার সম্পর্কে আরো সকল তথ্য যেমন পিনাট বাটার এর পুষ্টিগুণ, পিনাট বাটার
খাওয়ার নিয়ম, প্রতিদিন কতটুকু পিনাট বাটার খাওয়া উচিত এবং পিনাট বাটার খাওয়ার
উপকারিতা ইত্যাদি জেনে নেওয়া যাক।
পিনাট বাটারের পুষ্টিগুণ
পিনাট বাটার আমাদের নাস্তার টেবিলে প্রায় থাকে ।পিনাট বাটার ছোট বড় সাবাই পছন্দ
করে তবে পিনাট বাটারে অনেক পুষ্টিগুণ আছে সেই সম্পর্কে অনেকে জানে না।চলুন পিনাট
বাটারের পুষ্টিগুন জেনে নেই।
- ভিটামিন ই
- ভিটামিন বি ৬
- নিয়াসিন
- ক্যালসিয়াম
- ফাইবার
- ফ্যাট
- প্রোটিন
- ম্যাগনেসিয়াম
- ফসফরাস
- জিংক ইত্যাদি
পিনাট বাটারে কোনো অ্যাডেড সুগার নেই ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো।পিনাট
বাটারের পুষ্টিগুন জানা হলে এইবার জেন নেই পিনাট বাটার খাওয়ার নিয়ম
পিনাট বাটার খাওয়ার নিয়ম ও সঠিক সময়
সাধারণত আমরা সকালে রুটি বা পাউরুটি অথবা বিস্কিট দিয়ে নাস্তা করি। আপনি যদি
প্রতিদিন সকালে পিনাট বাটার দিয়ে পাউরুটি আর বিস্কিট খান তাহলে আপনার শরীরে অনেক
উপকার হবে।
আরো পড়ুনঃ লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়
পিনাট বাটার খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে প্রতিদিন সকালে নাস্তার রুটি বা বারোটির সাথে।
তবে শুধু রুটি বা পাউরুটি অথবা বিস্কুটের সঙ্গে পিনাট বাটার খেতে হবে এমনটা
কিন্তু না।আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের রান্নায় খেতে পাড়েন বিশেষ করে ফ্রুট সালাড
এর সাথে খেতে পারেন।
প্রতিদিন কতটুকু পিনাট বাটার খাওয়া উচিত
পিনাট বাটার যেমন পুষ্টিগুণে ভরপুর তেমন খেতেও খুব সুস্বাদু। তাই বলে যে আপনার
সকাল থেকে শুরু করে বিকেলের নাস্তা পর্যন্ত পিনাট বাটার খেতে হবে এমনটা কিন্তু
না। যেকোনো কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া ভালো না শরীরের জন্য ক্ষতিকর।প্রতিদিন দুই থেকে
তিন চামচের বেশি পিনাট বাটার না খাওয়াই ভালো। অতিরিক্ত পিনাট বাটার খাওয়ার ফলে
পাচতন্ত্রের উপরে তার প্রভাব পড়ে।সুতরাং প্রতিদিন দুই থেকে তিন চামচ পিনাট বাটার
খাবেন।
পিনাট বাটার খাওয়ার উপকারিতা
যারা নিজেদের শরীর ফিটনেস ভালো রাখতে চায় এবং শরীরে ভরপুর এনার্জির পেতে চায়
তারা প্রতিদিন সকালে নাস্তার সময় খাবার তালিকা পিনাট বাটার রাখতে পারেন।প্রতিদিন
সকালে খাবার তালিকা পিনাপ বাটার রাখার ফলে শরীরে অনেক উপকার হয়। চলুন জেনে
নেওয়া যাক পিনাট বাটার খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
- পিনাট বাটারে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট,আশঁ ও ম্যাগনেসিয়াম যা খাদ্য উপাদানটিকে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর করে তোলে।
- হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য প্রতিদিন কিছু পরিমাণ পিনাট বাটার রাখুন। কারণ এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা আমাদের শরীরের হৃদ যন্ত্র কে ভালো রাখে।
- প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় কিছু পরিমাণ পিনাট বাটার রাখার ফলে বেঁচে থাকা পটাশিয়াম খাদ্য উপাদানের সোডিয়ামের ক্ষতিকর প্রভাব কে কমিয়ে দেয়।এবং এটা থাকা পটাশিয়াম শরীরের বেশি গুলোকে সুন্দরভাবে গঠন করতে সাহায্য করে।
- পিনাট বাটার বাদাম থেকে তৈরি তাই এতে ভালো পরিমাণে প্রোটিন থাকে। দুই টেবিল চামচ পিনাট বাটার খাওয়ার ফলে প্রতিদিন আমাদের শরীরে ১৫ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন প্রবেশ করে।
- প্রতিদিন সকালে পিনাট বাটার দিয়ে নাস্তা করার ফলে সারাদিনের কাজকর্ম করার পরও শরীরে তেমন দুর্বল অনুভব হয় না। কারণ পিনাট বাটারে থাকা প্রোটিন ও ফ্যাট তাৎক্ষণিকভাবে এনার্জি যোগায় আমাদের শরীরে।
- আমাদের অতি পরিচিত ডায়াবেটিস। এই ডাইবেটিস সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিদিন চিনেবিহীন পিনাট বাটার খেতে পারেন এতে রোগ প্রতিরোধের কার্যকারিতা বেশ বাড়িয়ে দেয়।
- পিনাট বাটারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকার ফলে আমাদের শরীরের ভিতরে থাকা টক্সিক উপাদান গুলো বের করে দেয়।
- পিনাট বাটারে থাকা জিংক আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং আমাদের শরীরে থাকার রোগ নিরাময় করে।
চিকিৎ ছকদের মধ্যে গর্ভাবস্থায় পিনার বাটার খাওয়া অত্যন্ত ভালো কারণ এতে প্রচুর
পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকে যা মায়ের ও শিশুর শরীরের জন্য অনেক ভালো।আশা করি
সবাই পিনাট বাটার খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এখন জেনে নেওয়া যাক
পিনাট বাটার খেলে কি ওজন কমে নাকি।
পিনাট বাটার খেলে কি ওজন কমে
বর্তমানে সবাই নিজের শরীরকে ফিট রাখার জন্য ওজন কমাতে চায়। ওজন কমানোর জন্য সেরা
উপায় হচ্ছে পিনাট বাটার।যদি আপনার মনে করেন আপনার সারাদিনের সময় নেই আপনি
পরিশ্রম করতে পারবেন না অথবা জিমে যেতে পারবেন না তাহলে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায়
দুই থেকে তিন চামচ পরিমাণে পিনাট বাটার রাখতে পারেন। এখন সবাই ভাবছেন পিনার বাটার
খেলে কিভাবে ওজন কমবে।
পিনাট বাটার এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা অল্প খেলে আমাদের পেট
ভর্তি রাখে। এতে আমাদের বারবার খাওয়ার ইচ্ছা কমিয়ে দেয়। তাছাড়া পিনার বাটার
রয়েছে ট্রিপটোফিন নামক একটি উপাদান যা আমাদের শরীরের ক্যালরি ঝরাতে সাহায্য করে
এবং শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখে। সুতরাং আপনি পিনাট বাটার খেলে ওজন কমে
যাবে।এতক্ষণে হয়তো সবাই জানতে পেরেছেন পেনাল পাটার খেলে কি ওজন কমে নাকি। এবার
জেনে নিন এত উপকারী এবং সুস্বাদু পিনাট বাটার এর দাম কত বর্তমানে।
পিনাট বাটার রেসিপি তৈরির উপকরণ
একজন মানুষের প্রতিদিন দুই থেকে তিন টেবিল চামচ পিনাট বাটার খাওয়া উচিত। কারণ
এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ফাইবার থাকার ফলে আমাদের অতিরিক্ত খাওয়ার
অভ্যাসটা কমে যায়।
এতে আমাদের শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং বাহিরের অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে বিরত
রাখে। এই উপকারি পিনাট বাটার আপনি বাসায় কিভাবে তৈরি করতে পারবেন কি কি উপকরণ
লাগবে জেনে নেওয়া যাক।
পিনাট বাটার রেসিপি তৈরির উপকরণ
- তেল ২ টেবিল চামচ।
- মধু ২ টেবিল চামচ।
- বাদাম ২ কাপ।
- কোকো পাউডার ২ টেবিল চামচ।
- চকলেট টিপস ২ টেবিল চামচ।
- গরম মসলার গুড়া ১ টেবিল চামচ।
- লবণ আপনার স্বাদমতো।
পিনাট বাটার তৈরি করার উপায়
প্রথম একটি পাত্রে বাদাম গুলো নিন তারপর পাঁচ থেকে ছয় মিনিট পর্যাপ্ত সময় নিয়ে
বাদাম গুলো ভেজে নিন। এবার বাদাম গুলো সুন্দরভাবে ব্লেন্ডারের মাধ্যমে ব্লেন্ডার
করে নিন। বাদামগুলো সুন্দর মত ব্লেন্ড হওয়ার পর গরম মসলার গুরা, চকলেট টিপস,
কোকো পাউডার, তেল, মধু, এবং লবণ দিয়ে আরো ৫ থেকে ১০ মিনিট মিনিট ব্লেন্ড
করুন।যখন সবগুলো উপকরণ ঠিকমতো ব্লেন্ড হয়ে যাবে এরপর একটি বোতলের মাধ্যমে
মিশ্রণটি ফ্রিজে ঠান্ডা করার জন্য রাখুন। ঠান্ডা হয়ে গেলেই তৈরি হয়ে যাও
সুস্বাদু পিনাট বাটার।
শেষ কথা
পিনাট বাটারে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার ও ফ্যাট যা রক্তের সুগার লেভেল্র তেমন কোনো
প্রভাব ফেলে না। কারণ পিনার বাটারে কোন অ্যাডেড সুগার নেই।আশা করি সবার পিনার
বাটার খাওয়ার নিয়ম বাটার খাওয়ার উপকারিতা এবং প্রতিদিন কতটুকু কিনার বাটার
খাওয়া উচিত, পিনাট বাটার রেসিপি তৈরির উপকরণ সহ পিনাট বাটার এর সকল তথ্য
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন
অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন যাতে তারা উপকৃত হয়।
আয়াত টিপসের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url