বর্তমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নাম কি ২০২৪
বাংলাদেশের সরকারি কলেজের তালিকা
প্রিয় পাঠক আজকে আপনাদেরকে জানাবো রাষ্ট্রপতি কাকে বলে, রাষ্ট্রপতির কাজ কি এবং
বর্তমানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নাম কি এই সম্পর্ক।
রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে রাষ্ট্রপতি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান
অনুসারের মধ্য দিয়ে মন্ত্রী পরিষদ শাসিত সরকার ব্যবস্থা চালু হয়। রাষ্ট্রপতির
ব্যাখ্যা পেতে ও বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচিপত্রঃ বর্তমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নাম কি ২০২৪
ভূমিকা
আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো জানে না বর্তমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নাম কি। আবার
যারা নাম জানে কিন্তু তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছুই জানে না। তাহলে চলুন আজকের
জেনে নেওয়া যাক বর্তমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নাম কি, রাষ্ট্রপতি কাকে বলে,
রাষ্ট্রপতির কাজ কি এবং বাংলাদেশের সর্বপ্রথম রাষ্ট্রপতি কে ইত্যাদি আরো অন্যান্য
তথ্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
রাষ্ট্রপতি কাকে বলে
রাষ্ট্রপতি এমন একজন ব্যক্তি যিনি একটি দেশের আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ, বিচার বিভাগ
ও বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠানের প্রধান। মূলত রাষ্ট্রপ্রতি হলো একটি দেশের
সাংবিধানিক প্রধান। একজন রাষ্ট্রপতি একটি দেশের ব্যক্তিগণের নির্বাচনের মাধ্যমে
মনোনীত হন। উনিশ শতকের দিকে রাষ্ট্রপ্রতি সরাসরি জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত
করা হত। বর্তমানে জাতীয় সংসদ কর্তৃক নির্বাচিত করা হয়।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে মোট কয়টি নদী আছে
একজন রাষ্ট্রপতি কে কমান্ডার ইন চিফ বলা হয়। রাষ্ট্রপতি কোন দেশের আইন শাসন ও
বিচার বিভাগের ক্ষমতা হ্রাস কিংবা বৃদ্ধি করার অধিকার রাখে। একজন রাষ্ট্রপতি কখনই
সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে না। তিনি শুধুমাত্র দেশের মানুষ ইতিহাস ও ঐতিহ্যর
প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন। একজন রাষ্ট্রপতির আদেশ ওই দেশের প্রধানমন্ত্রী ও মানতে
বাধ্য। রাষ্ট্রপতিকে এই একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বলা হয়ে থাকে।
রাষ্ট্রপতির কাজ কি
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি প্রতিরক্ষা সার্ভিসের সর্বাধিনায়ক। বাংলাদেশের সংবিধান
অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার,সুপ্রিম কোর্টের বিচারক,পাবলিক সার্ভিস কমিশনের
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রণ, এবং
অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও সদস্যদের নিয়োগ প্রদান করেন। এছাড়াও রাষ্ট্রপতি
সরকারের কার্যক্রম বন্টন ও কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য বিধি প্রণয়ন করেন।
আরো পড়ুনঃ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও উদাহরণ
যারা নতুন নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য সদস্য নির্বাচিত হয় তাদেরকে শপথ গ্রহণ
করানোর মতো কিছু কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করেন রাষ্ট্রপতি।বাংলাদেশের সংবিধানের
৪৯ অনুচ্ছেদে বিচার সংক্রান্ত ক্ষমতার উৎস হলেন রাষ্ট্রপতি।একে বুঝায় কোন আদালত
বা ট্রাইবুনাল কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত শাস্তি স্থগিত ও বিলম্বিত করার ক্ষমতা রাখে।
বাংলাদেশের সর্বপ্রথম রাষ্ট্রপতির নাম কি
বর্তমানে সবার একটি কমন প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম রাষ্ট্রপতির নাম কি
এবং কে ছিলেন।কারণ প্রায় ভাইবা বোর্ডে এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নটি অনেকেই করে
থাকে। স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়ে আমাদের অবশ্যই জানা দরকার বাংলাদেশের
প্রথম রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন।
বাংলাদেশের সর্ব প্রথম রাষ্ট্রপতির নাম হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।দক্ষিণ
এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে সব দেশে পরিচিত।বঙ্গবন্ধুকে
বাংলাদেশের জাতির জনক বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশকে স্বাধীন করার পিছনে তার কতটুকু
অবদান আছে তা সকল বাঙালি জানে। বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগের কথা সবার মুখে শোনা যায়।
বর্তমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নাম কি
বর্তমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রতির নাম মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন। তিনি ২০২৩ সালের ২৪
শে এপ্রিল পদ গ্রহণ করেন। তার দলের নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। মোহাম্মদ
শাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের ২২ তম রাষ্ট্রপতি। তিনি পাবনা জেলায় শিবরামপুর গ্রামে
জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৬ সালের রাধানগর মজুমদার একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ থেকে
এসএসসি পাস করেন।
এবং ১৯৬৮ সালে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এবং একই কলেজ থেকে
১৯৭১ সালে বিএসসি পাস করেন। তারপর তিনি ১৯৭৪ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। তার পিতার নাম শরিফ উদ্দিন আনসারী ও মাতার নাম
খায়রুন্নেসা। মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন ১৯৭৫ সালে পাবনা শহীদ এডভোকেট আমিন উদ্দিন
আইন কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রী অর্জন করেন।
তিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ছিলেন। এবং
মুক্তিযুদ্ধে ও অংশগ্রহণ করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন ১৯৭২
সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার সহধর্মিনী নাম রেবেকা সুলতানা।
তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে যার নাম মোঃ আরশাদ আদনান রনি।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির বাসভবন ও সিকিউরিটি
বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপ্রতির নাম মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন। তার জন্মস্থান পাবনা
জেলার শিবরামপুর গ্রামে। তবে ঢাকায় তার বাসভবন রয়েছে। রাষ্ট্রপতির প্রধান
বাসভবন হল বঙ্গভবন। তাছাড়া উত্তরবঙ্গে অবস্থিত রাষ্ট্রপতির বাসভবন হল উত্তরা
গণভবন। রাষ্ট্রপতির সিকিউরিটি হিসাবে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট নিযুক্ত
রয়েছেন। তাছাড়া স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স নামেও নিরাপত্তা বাহিনী রাষ্ট্রপ্রতি ও
প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির মেয়াদ কত বছর
একজন রাষ্ট্রপতির মেয়াদ তার পদ গ্রহণের তারিখ হতে পাঁচ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল পদ গ্রহণ করেন।
এই পথ গ্রহণের সময় হতে তিনি পাঁচ বছর রাষ্ট্র শাসন করবেন। তবে পদের মেয়ে আজ
সংবিধান অনুযায়ী কিছু শর্ত রয়েছে।যেমনঃ
- একজন রাষ্ট্রপ্রতি ৫ বছর তার পদে অধিষ্ট থাকবেন। কিন্তু তার পদের মেয়াদ শেষ হওয়া না পর্যন্ত তার কোন উত্তরাধিকারী এই কার্যাবহার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি এই পদেই স্থির থাকবেন।
- একই রাষ্ট্রপতি দুইবার একই পদে অধিষ্ট থাকতে পারবে না।
- রাষ্ট্রপ্রতি যদি পদত্যাগ করতে চায় তাহলে স্পিকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্তপত্র থাকলে সে পদত্যাগ করতে পারবে।
- একজন রাষ্ট্রপতি তার পদে অব্যাহত থাকা অবস্থায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারবে না।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার নূন্যতম বয়স কত
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি পদে যোগ্যতা অর্জন করতে কিছু প্রয়োজনীয়
যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদি কোন ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি হতে চায় তাহলে এই
যোগ্যতা অবশ্যই পূরণ থাকতে হবে। সংবিধানের মানদন্ড পুরো না হলে কোন ব্যক্তি
রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হতে পারবেনা। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার নূন্যতম
বয়স হলো ৩৫ বছর। অবশ্যই ওই ব্যক্তিকে সংসদ সদস্যের ধারা নির্বাচিত হতে হবে। এবং
ওই ব্যক্তিকে সংবিধানের অধীনে থাকা পাতার অস্তিত্ব থাকতে হবে।
বাংলাদেশের ১৯ তম রাষ্ট্রপতির নাম কি
বাংলাদেশের ১৯ তম রাষ্ট্রপতির নাম হল জিল্লুর রহমান। তিনি ১৯২৯ সালের ৯ই মার্চ
জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মেহের
আলীমিয়া। তার পিতা একজন আইনজীবী ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম আইভি রহমান যিনি একজন
আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ ছিলেন।
জিল্লুর রহমান ১৯৪৬ সালের ভৈরব kb পাইলট মডেল হাইস্কুল থেকে এইচ এস সি পাস করেন।
তারপর তিনি ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাস করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস
বিষয়ে স্নাতক উত্তর ডিগ্রী পাস করেন। জিল্লুর রহমান ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন
থেকে শুরু করে দেশের সব কয়টি আন্দোলনের মধ্যে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
তিনি ১৯০৯ সালের ১২ ই ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি হিসেবে বঙ্গভবনের শপথ পাঠ করেন।
তিনি রাজনৈতিক জীবনে বেশ অগ্রসর ছিলেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের
মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেলার ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে সংসদে
নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ময়মনসিংহের আসন থেকে বিপুল
ভোটে নির্বাচিত হন।
রাজনৈতিক জীবনে দীর্ঘ পরিক্রমার পর তিনি কিডনি ও মূত্র প্রদাহ জনিত রোগের কারণে
অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ মার্চ ২০১৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এবং
২২ মার্চ বনানী কবরস্থানের জিল্লুর রহমানকে সম্মানের সহিত দাফন করা হয়। জিল্লুর
রহমানের মৃত্যুবরণের পর জাতীয় সংসদে আব্দুল হামিদ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির
দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
লেখকের শেষ কথা
আশা করি সবাই পোস্টটি পড়ে বর্তমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নাম কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে
পেরেছেন।আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে
শেয়ার করবেন যাতে তারা উপকৃত হয়।রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে যদি আরো কোন প্রশ্ন থাকে
অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন।আপনার প্রশ্ন সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ
চেষ্টা করব। সবাইকে ধন্যবাদ।
আয়াত টিপসের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url